প্রেমের দেবী আফ্রোদিতি; মানুষ থেকে দেবতা মুগ্ধ যার রুপে
দেবী আফ্রোদিতি      ছবিঃউইকিমিডিয়া


প্রেমের কথা শুনলে মনের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক অন্য রকম অনুভূতি। মনে হয় দক্ষিনা বাতাস পরশ বুলাচ্ছে প্রেমিক মনে। ছোট থেকে বড়, ধনী কিংবা গরীব, উচু অথবা নীচু সবার মনে রয়েছে প্রেম ভালোবাসা। এই প্রেম ভালোবাসাকে কিন্তু শুধু আজকের আধুনিকতা বলা যাবে না। শত, সহস্র বছর আগেও ছিল এর অস্তিত্ব।  তাইতো গ্রিক পুরাণে উল্লিখিত আছে প্রেমের দেবী আফ্রোদিতির কথা। প্রেমলীলাই নানান বৈচিত্রে ভরপুর দেবী আফ্রোদিতির আত্ম কাহিনী। প্রেম-ঘৃণা, আবেগ-বাসনার মিশ্রিত ঘটনাগুলো খুবি আকর্ষণীয়।
যাকে প্রেমের দেবী বলে অভিহিত করা  হয়েছে তার প্রেমলীলা তো একটু বেশিই মজার হবে।  তাইতো স্বাভাবিক!  মানুষ থেকে শুরু করে যে দেবতাকেও প্রেমের ফাদে ফেলেছেন সে আর কিছু হোক বা না হোক অবশ্যই ছলাকলায় পারদর্শী ছিলেন। 
আফ্রোদিতি ভেনাস নামেও বেশ পরিচিত ছিলেন। শুরু থেকেই রহস্যে ভরপুর এই বেদীর জীবন।  মনে করা হয় আফ্রোদিতির জন্ম সমুদ্রের ডেউয়ের ফেনা থেকে । টাইটান ক্রোনাস তার পিতা ইউরেনাসকে নির্বীর্য করে দিলে ইউরেনাসের অন্ডকোষ সিথেরার সমুদ্রে পতিত হয়। মুহূর্তের মাঝে সমুদ্র উতাল হয়ে ওঠে। তরঙ্গে তরঙ্গে ফেটে পড়তে থাকে সমুদ্রের উচ্ছ্বসিত ফেনা। সেই ফেনপুঞ্জের মাঝে আবির্ভূত হয় বিচিত্র বর্ণশোভিত একটি ঝিনুক এবং ঝিনুকের ওপরই দেখা যায় আফ্রোদিতিকে। ফেনা থেকে জন্ম হয়েছে বলে তার নাম রাখা হয় আফ্রোদিতি।

প্রেমের দেবী আফ্রোদিতি; মানুষ থেকে দেবতা মুগ্ধ যার রুপে
ছবিঃ উইকিমিডিয়া

আফ্রেদিতির জন্ম পরিচয় নিয়ে রয়েছে ভিন্নমত। মনে করা হয় তিনি ছিলেন দেবরাজ জিয়াসের কন্যা। অপরূপ সৌন্দর্য আর মোহনিয় যৌবনের অধিকারী ছিলেন আফ্রোদিতি। এজন্য দেবরাজ জিয়াসের চিন্তার শেষ ছিলো ন।  জিয়াস  সবসময় ভয়ে থাকতেন এই বুঝি অলিম্পাসের দেবতারা নিজেদের মাঝে যুদ্ধে নেমে যায় আফ্রোদিতি কে পাওয়ার জন্য। ভয়তো পাওয়ারই কথা কেননা আফ্রোদিতিকে দেখামাত্র মানুষ বা দেবতাদের মধ্যে প্রেমভাব জেগে উঠত। দেবী হয়েও তিনি প্রেমে পরলেন মর্ত্য মানব এডোনিসের। এডোনিসকে আবার ভালোবাসতেন মৃত্যুপূরীর রাণী। এতে এক বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হল।  সেই অবস্থাকে সুস্থীর করতেই জিয়াস আর হেরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলেন আফ্রোদিতির বিয়ে দেবেন আগুন ও শিল্পের দেবতা হেফাইস্টুসের সাথে। বিয়ে হল। কিন্তু আফ্রোদিতি বিচলিত। হেফাইস্টুস সে ভালোবাসতে পারলো না।  হেফাইস্টুস কে দেখলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন তিনি। কিন্তু এভাবে কতদিনআফ্রোদিতি জাদুকরী ক্ষমতার গুনে ক্ষণিকের মাঝেই প্রেমে ফেলত পুরুষদের। সুযোগটা তাই হাতছাড়া করলেন না। এরেস, হারমেস, ডায়নসিস প্রমুখ দেবতার সাথে প্রেমের সম্পর্কে লিপ্ত হল। এদিকে হেফাইস্টুস স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জেনেও চুপ   ছিলেন।  তবে বুদ্ধি ও দক্ষতার গুনে দেবীর বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিশোধও নেন তিনি। একদিন এরেস ও আফ্রোদিতি যখন প্রবল প্রেমে মত্তপ্রায় তখন সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় তাদের আটক করেন হেফাইস্টুস