সাম্প্রতিক সময়ের সব থেকে আলোচিত বিষয় হচ্ছে করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ । করোনা  আতংকে আমি আপনি সকলেই এক প্রকার তথা কথিত নন্দলালে পরিনত হয়েছি । করোনা ভাইরাসের আগে বিশ্ব গত  ১০০ বছরে বেশ কয়েকটি মহামারির মুখোমুখি হয়েছে , তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ছিলো ১৯১৮ সালের ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী , তথাকথিত স্প্যানিশ ফ্লু। এটি ছিল এইচ১ এন ১ (H1N1) ভাইরাস যার অস্তিত্ব প্রথম পাত্তা পাওয়া গিয়েছিলো পাখিদের শরীরে। ১৯১৮ সালের এটি প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সেনা সদস্যদের মধ্যে চিহ্নিত হয়েছিলো । মনে করা হয়েছিল স্পেনেই এর উদ্ভব তাই নাম দেও্যা হয়েছিলো স্প্যানিশ ফ্লু। কিন্তু ২০০৫ সালের এক গবেষণা বলছে যে এটির সূচনা নিউ ইয়র্ক থেকে হয়েছিল। 


এটি অনুমান করা হয় যে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মানুষ বা বিশ্বের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ এই ভাইরাস দ্বরা সংক্রামিত হয়েছিল। মৃত্যুর সংখ্যাটি বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ৫০ মিলিয়ন ছাড়িয়েছিল। যারা মৃত্যু বরন করেছিলেন তার মধ্যে অধিকাংশ ছিলো ৫ বছরের কম বয়সী, ২০-৪০ বছর বয়সী এবং ৬৫ বছরের বা তার চেয়ে বেশি বয়সের মানুষ। বর্তমানের কোভিড-১৯ আর করোনা ভাইরাসের মধ্যে একটি সাধারণ মিল লক্ষ্য করা যায় সেটি হল , দুটি ভাইরাসকেই নোবেল ভাইরাস হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে অর্থাৎ এটি এতটাই নতুন যে প্রতিরোধে হিমসীম খেতে হয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে। কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রেও আমরা দেখতে পারছি বয়স্কদের জন্য এটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
ইউনিভার্সিটি পেডিয়াট্রিক সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ মার্ক শ্লাইস মিনেসোটা হেলথলাইকে জানিয়েছেন, ১৯১৮ সালের মহামারী স্ট্রেন ইনফ্লুয়েঞ্জা একেবারেই নতুন ছিলো তাই বয়স্কদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো – তাছাড়া এটি অন্যান্য সাধারন ফ্লুর থেকেও আলাদা ছিলো। প্রথম অবস্থাতে স্প্যানিশ ফ্লুর কোন ভ্যক্সিন ছিলো না। মার্কিন যুক্তরাষ্টে লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রথম ফ্লু ভ্যাকসিনটি ১৯৪০ এর দশকে এসেছিল। স্প্যনিশ ফ্লু মারাত্মক হবারএকটি কারন ছিল গৌণ ব্যকটিরিয়া সংক্রমনের চিকিৎসার জন্য কোন অ্যান্টিবায়োটিক ছিল না ।
সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে বর্তমান সময়ের উন্নত প্রযুক্তি  এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান অচিরেই করোনা সমস্যার সমাধান করতে পারবে বলে আশা করতে পারি। ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাস বিশ্বজুড়ে যে মহামারী আকার ধারণ করেছে তার থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে বাচাতে  জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, এবং সামাজিক দূতত্ব মেনে চলতে হবে।   আসুন করোনা মোকাবেলাই আতংকিত  না হয়ে সচেতন হয়।