বাস্তব জীবনের অন্ধকার জগতের অপরাধীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আমাদের প্রায়শই মৃত্যুর ভয়কে জাগিয়ে তোলে, তবে আমরা সিনেমার পর্দায় বিপজ্জনক খুনিদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড উপভোগ করি। বাস্তব জীবন ও সিনেমার জীবনে অপরাধীরা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করে থাকে তার ভিতরে সিরিয়াল কিলিং বা ধারাবাহিক হত্যা অন্যতম। এটা পুরোপুরি আলাদা একটা ধারনা। বাস্তব জীবনের সিরিয়াল কিলিং যতটানা ভয়ঙ্কর সিনেমার পর্দায় সেটা তার থেকে বেশি থ্রিলিং ও জনপ্রিয়। বহুদেশের বহু সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি এই ঘরনা নিয়ে অনেক জনপ্রিয় সিনেমা বানিয়েছে। অন্যান্য ভাষার তুলনায় যার সংখ্যাটা খুব বেশি হলেও বাংলা ভাষায় নেহাত কম নয়। চলুন দেখে নেওয়া যাক তেমন কয়েকটা বাংলা সিনেমা।



বাইশে শ্রাবন 
সিনেমাটির পরিচালক সৃজিত মুখার্জি। এটি তার পরিচালিত দ্বিতীয় সিনেমা। দুর্দান্ত মেকিং, প্লট ও আবহ সঙ্গীত মিলিয়ে সিনেমাটিকে দর্শক টানতেই একেবারে সফল। প্রবীর রায়চৌধুরীর তিক্ততা এবং অস্থিরতা প্রসেনজিৎ এর চেয়ে ভাল আর কেউ ভালো করতে পারবে না, অন্তত সিনেমাটি দেখার পর দর্শকদের এমনটাই মনে হবে। সৃজিত পরিচালিত ও প্রসেনজিৎ অভিনিত সিনেমাটি একটা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। এছাড়াও আছে শক্তিমান অভিনেতা পরমব্রত। গল্পে যার ভূমিকা দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত হওয়া প্রবীর মুখার্জির সাথে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করে সিরিয়াল কিলারকে ধরা। এই আরেকটি অসাধারন দিক হচ্ছে গল্পে জনপ্রিয় বাংলা কবিতার ব্যবহার। সিনেমাটির শেষে থাকবে মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মত টুইস্ট।  প্রসেনজিৎ এর অসাধারণ অভিনয় সমালোচক এবং শ্রোতা উভয়ের দ্বারা অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছিল। ‘বাইশে শ্রাবন’ ২০১১ সালের সর্বাধিক উপার্জনকারী চলচ্চিত্রের একটি হয়ে উঠে।

ভিঞ্চি দা 
“ভিঞ্চি দা” সিনেমাটি একটি ভয়াবহ খুনের দৃশ্য দিয়ে শুরু হয়েছে যেখানে এক তরুণ আদি বোস তার খারাপ চরিত্রের বাবাকে হত্যা করে করে এবং পরে স্থানীয় থানায় এই কথা জানায়। সিনেমাটির শুরুর দৃশ্যটি দর্শকদের সামনে উন্মোচন করে একজন সিরিয়াল কিলারের জীবনের শুরুর অন্ধকার দিকটি। গল্পটি এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আমরা দেখি যে এখন একজন আইনজীবী (আদি বোস) ন্যায়বিচারের জন্য অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে একের পর এক হত্যা করতে থাকে তাদেরকেই যারা অন্যায় করেও আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। অন্যদিকে আছে একজন প্রতিভাবান মেকআপ শিল্পী, যিনি চলচ্চিত্র জগতে তার যথাযোগ্য সম্মান পান না। এই দুই চরিত্রের মেলবন্ধনে চলতে থাকে একের পর এক খুন।

শজারুর কাটা
১৯৬০-এর দশকে লেখা, ব্যোমকেশ সিরিজের অন্যতম সেরে গল্প। সিনেমাটিতে চলতে থাকে এক ত্রিকোণ প্রেমের গল্প। পাশাপাশি চলতে থাকে একের পর এক সিরিয়াল কিলিং। কিলার সমাজের নিচু শ্রেণী থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে উচু শ্রেণীর মানুষের হত্যায় অগ্রসর। যেটা কিনা শেষ হয় ত্রিকোণ প্রেমের গল্পে আঘাত দিয়ে।

ষড়রিপু
থ্রিলার হওয়ার স্বত্বেও 'ষড়রিপু' সিনেমাটিতে নেই কোনো মার কাট সিন, নেই কোনো ভিলেনের পিছনে দৌড়, বরং এটি যুদ্ধের সিনেমা যেখানে দেখতে পাবে প্রচন্ড মানসিক শক্তির ব্যবহার যা আপনার মস্তিষ্কের ধূসর সেল গুলোকে করে তুলবে উত্তেজিত ও উত্তপ্ত। ডিটেক্টিভ চন্দ্রকান্ত তার পারিপার্শ্বিক প্রমাণ, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং ব্যক্তিগত ইতিহাসকে ছাড়িয়ে প্রায়শই যৌক্তিক উপসংহার টানতে অভ্যস্ত। পরিচালক অয়ন চক্রবর্তী সফলভাবে একটি ভালো মুভি আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন যেখানে চিরঞ্জিত, ইন্দ্রনীল, রজতাভো এবং সুদীপ্তা চক্রবর্তীর দুর্দান্ত অভিনেতারা অভিনয় করেছেন।

আসছে আবার শবর
“আসছে আবার শবর” পরিচালক অরিন্দম সিলের গোয়েন্দা সিরিজ শবরের তৃতীয় সিনেমা। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় রচিত তাঁর জনপ্রিয় গল্প প্রজাপতির মৃত্যু ও পুনর্জন্ম অবলম্বনে সিনেমাটির প্লট রচিত।