২০০০ হাজার বছর আগের কথা গ্রীষ্মের কোনো এক দিন পাটলিপুত্র থেকে কিছুটা
দুরের এক গ্রাম থেকে এক আচার্য আচমকাই অপহৃত হল এক অজানা বাহিনি দ্বারা। কিন্তু আচার্যের
সাথে দুর্ব্যবহারতো দূরে থাক অপহরণকারীরা আচার্যকে খুব সম্মান করতে থাকল। সেই সময় শুধু
একজন আচার্যই না মোট ৯ জন সমাজের অত্যান্ত জ্ঞানি মানুষ হারিয়ে গেল কয়েকদিনের জন্য
পরে তারা আবার ফিরেও এসেছিল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মাঝের কয়েকদিন তারা ছিল কোথায়?
প্রায় ২০০০ হাজার বছর ধরে ভারতবর্ষের অবিশ্বাস্য এক “গুপ্ত সংগঠন” নিয়ে
নানান কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। ধারণা করা হয় প্রায় ২০০০ হাজার বছরেরও বেশি আগে সম্রাট
আশকের আমলে মাত্র ৯ জন সদস্য নিয়ে এই সংগঠনটি গঠিত হয় এবং কেউ কেউ বিশ্বাস করে সেই
৯ জনের “সিক্রেট” সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত ধারণ করে চলেছে কালক্রমে তাদেরই মনোনীত
আরও ৯ জন। যাদের জ্ঞান, প্রজ্ঞা সাধারন মানুষের থেকে আলাদা। তারা একেকজন একেক বিষয়ের
পণ্ডিত। এই গুপ্ত সংঘ কি আসলেই ছিল নাকি নিছক একটি মনগড়া কল্পকাহিনি? চলুন তলিয়ে যায়
সেই অতলে যেখানে ইতিহাসের ভাজে ভাজে লুকিয়ে আছে সেই কিংবদন্তী।
কেন গঠিত হয়েছিল “এই সিক্রেট সংঘ”?
খ্রিস্টপূর্ব ২২৬ অব্দের কথা, সম্রাট অশোক কেবল মাত্র কলিঙ্গের যুদ্ধে বিজয়
লাভ করেছে। যুদ্ধে প্রায় ১,০০,০০০
মানুষের মৃত্যু দেখে অশোক দুঃখে কাতর হয়ে প্রতিজ্ঞা করে সে আর কোনো যুদ্ধে জড়াবে
না, সেই সাথে সে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করে।
যুদ্ধে না জড়ালে যে পিতামহ চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য রাজ্য টিকিয়ে রাখা আসম্ভব সে সত্য সে বুঝতে শুরু করেছে। রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী অশোককে দুর্বল ভেবে আক্রমণ করতে পারে। এভাবে রাজ্যে দেখা দিতে পারে এক চরম বিশৃঙ্খলা। এসব ভেবে অশোক এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করে। সে এক “সিক্রেট সংঘ” গঠনের পরিকল্পনা করে। যারা রাষ্ট্র শাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা শাস্ত্রে পণ্ডিত তাদেরকে নিয়েই গঠিত হয় ৯ জনের এক চরম গোপন সংঘ। এটি এতই গোপন যে, ৯ জন সদস্য নিজেরাই নিজেদের সম্পর্কে জানে না, এমন কি একজনও বাকি আট জনকে জানত না যে তারা এই সংঘের সদস্য। সম্রাট এই ৯ জনকে ৯ টি বই লিখতে বলে। যে বই গুলো সম্পর্কে লেখক, সম্রাট ও বইয়ের রক্ষী বাহিনী ছাড়া বাকি কেউ জানবে না।
অশোকের সম্রাজ্য ছবিঃ Flappiefh |
যুদ্ধে না জড়ালে যে পিতামহ চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য রাজ্য টিকিয়ে রাখা আসম্ভব সে সত্য সে বুঝতে শুরু করেছে। রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী অশোককে দুর্বল ভেবে আক্রমণ করতে পারে। এভাবে রাজ্যে দেখা দিতে পারে এক চরম বিশৃঙ্খলা। এসব ভেবে অশোক এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করে। সে এক “সিক্রেট সংঘ” গঠনের পরিকল্পনা করে। যারা রাষ্ট্র শাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা শাস্ত্রে পণ্ডিত তাদেরকে নিয়েই গঠিত হয় ৯ জনের এক চরম গোপন সংঘ। এটি এতই গোপন যে, ৯ জন সদস্য নিজেরাই নিজেদের সম্পর্কে জানে না, এমন কি একজনও বাকি আট জনকে জানত না যে তারা এই সংঘের সদস্য। সম্রাট এই ৯ জনকে ৯ টি বই লিখতে বলে। যে বই গুলো সম্পর্কে লেখক, সম্রাট ও বইয়ের রক্ষী বাহিনী ছাড়া বাকি কেউ জানবে না।
অশোক এই বইগুলোর জন্য এক
শক্তিশালী রক্ষীবাহিনী গঠন করে, যেন তারা বইগুলো শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করতে
পারে। এমনকি তাদের এ ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছিল যে, যদি এমন পরিস্থিতি আসে যে শত্রুদের
হাত থেকে রক্ষা করা আর সম্ভব না তখন বইগুলো পুড়িয়ে ফেলবে।
কি ছিল সেই ৯ টি বইয়ের মূল বিষয়?
৯ জন সদস্য কি এমন ৯ টি বই লিখেছিল যে, সেগুলোর এত সুরক্ষা প্রয়োজন, কি
এমন ছিল বইগুলোয় যে, যার সাহায্যে যুদ্ধ ছাড়া রাজ্য টিকে থাকবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
Talbot Mundy একজন ইংরেজি লেখক তাঁর “The Nine Unknown Men” বইতে ৯ টি বইয়ের কথা উল্ল্যেখ
করেছেন, যেগুলো হল
- প্রোপ্যাগান্ডা
- শরীরবিদ্যা
- অণুজীববিদ্যা
- আলকেমি
- যোগাযোগ
- মহাকর্ষ অভিকর্ষ
- সৃষ্টিতত্ত্ব
- আলোকবিদ্যা
- সমাজবিদ্যা
এইসব বইগুলো ছিল সংশ্লিষ্ট বিষয়ের চূড়ান্ত জ্ঞানের সংগ্রহ। যেগুলো ছিল সম্রাট
অশকের রাজ্য শাসনের অন্যতম অস্ত্র।
গল্পের শুরুতে আমরা যে আচার্যের কথা বলেছিলাম সেও ছিল সম্রাট অশকের গুপ্ত
সংঘের সদস্য।
এ বিষয়ে আরও জানতে চাইলে পড়তে পারেনঃ
কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের "প্রজ্ঞাসূত্র"
আরও পড়ুন- বাংলা সিনেমায় সেরা সিরিয়াল কিলিং
0 Comments
Post a Comment