ক্লাসে যখন  কোন অ্যাসাইনমেন্ট দেয়, অনেকেই তখন তৃতীয় হাত খুজে বলেন অসুস্থ ছিলাম।কিন্তুু এই শারীরিক অসুস্থতাকে পুঁজি না করে ক্রিকেটের ইতিহাসে কেউ কেউ হয়ে উঠেছেন লিজেন্ডারি ক্রিকেটার।হয়ে উঠেছেন কারো কারো স্বপ্নের নায়ক।


শারীরিক বাঁধা জয় করেছে যারা, স্বপ্নের নায়ক হয়েছে তারা!
রোডস
ছবিঃ উইকিমিডিয়া

জন্টি রোডস, দক্ষিন আফ্রিকা

ক্রিকেট ইতিহাসে একমাত্র প্লেয়ার যিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে সাবস্টিটিউট ফিল্ডার হিসাবে নেমে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছিলেন।ধরেছিলেন সাতটি ক্যাচ।যিনি শুধুমাত্র ফিল্ডিং দিয়ে দলে থাকার দাবিদার ছিলেন।১৯৯২ থেকে ২০০৩, খেলেছেন সাউথ আফ্রিকার জার্সিতে।দুর্দান্ত এই ফিল্ডার ছিলেন মৃগী রোগী।মাত্র ছয় বছর বয়সে ধরা পড়ে মৃগী রোগ। মৃগী রোগ তার ক্রিড়া জীবনের সমস্যা হয়ে উঠতে পারে নি।মাত্র ২২ বছর বয়সে সাউথ আফ্রিকার টেস্ট দলে অভিষিক্ত হন।



শারীরিক বাঁধা জয় করেছে যারা, স্বপ্নের নায়ক হয়েছে তারা!
যুবরাজ
ছবিঃ উইকিমিডিয়া

যুবরাজ সিং, ইন্ডিয়া

২০১১ সালে ভারতের ওয়ানডে ওয়াল্ড কাপ জয়ের অন্যতম নায়ক যুবরাজ সিং ১৯৮১ সালের ১২ই ডিসেম্বর ইন্ডিয়ার চন্দননগরে জন্মগ্রহণ কেন।ছোটবেলায়  কোন শারীরিক সমস্যা না থাকলেও ২০১১ এর বিশ্বকাপের পরপরই জানা যায়  ম্যালিগনেন্ট ক্যান্সার তার শরীরে বাসা বেধেছে।২০১২ সাল পর্যন্ত প্রায় একবছর তার কেমোথেরাপি চলে। কেমোথেরাপির ঐ কঠিন সময়ে  শুধুমাত্র ইচ্ছাশক্তির কারনের ২০১২ সালের নিউজিল্যান্ডের সাথে একটি আন্তজার্তিক টি-টুয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটে।

ভগবৎ চন্দ্রশেখর, ভারত

সেসময় ভারতীয় জাতীয় দলে চলছে  স্পিন বিপ্লব।৫৮ টেস্টে ২৪২ উইকেট নেওয়া এই লেগ স্পিনার ছোটবেলায় ছিলেন পোলিও রোগী।ভগবৎ চন্দ্রশেখর নামের এই লেগ স্পিনার পোলিও রোগের কারনে বেশীক্ষণ হাত তুলে রাখতে পারতেন না।এজন্য তাকে বেশ জোরেই বল করতে হতো যা তাকে গড়ে তুলেছিল মনসুর আলী পতৌদির ট্রাম্পকার্ড।


শারীরিক বাঁধা জয় করেছে যারা, স্বপ্নের নায়ক হয়েছে তারা!
গাপটিল
ছবিঃ উইকিমিডিয়া

মার্টিন গাপটিল, নিউজিল্যান্ড

১৯৮৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর  নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা মার্টিন গাপটিলের  নিউজিল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে অভিষিক্ত হন ২০০৯ সালে।নিউজিল্যান্ডের হয়ে অভিষিক্ত ওয়ানডেতে সেন্চুরী ও তাদের ইতিহাসে ওয়ানডেতে একমাত্র ডাবল সেন্চুরী করা খেলোয়াড় তিনিই।একটা সময় প্রশ্ন জেগেছিল কখনো কি তিনি ক্রিকেট খেলতে পারবেন!নিজেদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গিয়ে বড় ভাই বেন তার পায়ের উপর দিয়ে মালবাহী গাড়ি তুলে দেন।এতে করে ডাক্তার তার পুরো পা কেটে ফেলার পরামর্শ দেন।কিন্তু পরবর্তীতে তার বাম পায়ের তিনটি আঙুল কেটে ফেলতে হয়।


শারীরিক বাঁধা জয় করেছে যারা, স্বপ্নের নায়ক হয়েছে তারা!
ওয়েড
ছবিঃ উইকিমিডিয়া

ম্যাথু ওয়েড, অস্ট্রেলিয়া

ক্রিকেট নিয়ে যখন কোন কিশোরের স্বপ্ন দেখার শুরু হয়, ঠিক সে সময়েই সামনে বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল টেস্টিকুলার (অন্ডকোষ) ক্যান্সার।মাত্র ১৬ বছর বয়সে ধরা পড়ে টেস্টিকুলার ক্যান্সার। সে যাত্রায় দুইবার কেমোথেরাপি নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন।এছড়াও তিনি একজন বর্ণান্ধ। বেশ কিছু রঙ চোখে পড়ে না তার।এসব বাধা উতরিয়ে ঠিকই ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে আন্তজার্তিক অঙ্গনে অভিষিক্ত হন।


শারীরিক বাঁধা জয় করেছে যারা, স্বপ্নের নায়ক হয়েছে তারা!
কামিন্স
ছবিঃ উইকিমিডিয়া

প্যাট কামিন্স,অস্ট্রেলিয়া

মাত্র ১৮ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়া দে অভিষিক্ত হতে পারবেন এটা হয়তো কখনো ভাবেননি প্যাট কামিন্স।১৯৯৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনীতে জন্ম নেওয়া কামিন্স ছোটবেলায় এক দূর্ঘটনায় তার ডান হাতের একটি আঙুল হারায়।অভিমান করে তার বোন দরজা বন্ধ করতে গিয়ে কখন যে ভাই  কামিন্সের ডান হাতের মধ্যমা দরজার ফাকে পড়ে যায় সেটা খেয়াল করে ওঠা হয় না।ফলে কেটে ফেলতে হয় ডান হাতের মধ্যমা।


শারীরিক বাঁধা জয় করেছে যারা, স্বপ্নের নায়ক হয়েছে তারা!
মাশরাফি
ছবিঃ উইকিমিডিয়া

মাশরাফি বিন মর্তুজা, বাংলাদেশ

ইন্জুরীতে পড়া খেলাধুলারই একটা অংশ।কিন্তু মাশরাফি  এটাকে নিয়ে গেছেন অন্য পর্যায়ে।পায়ের হাটুতে করিয়েছেন সাতটা বড়ো অস্ত্রোপচার। সম্ভবনা আছে পঙ্গু হয়ে যাবার।কিন্তু তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যদি শরীরে গুলি লাগার পরেও  যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে তাহলে আমি কেন বল করতে পারবো না।যা তাকে করে অনন্য। অসুস্থতাকে জয় করেই হিরো বনে গেছেন হাজার হাজার ভক্তের মনে।