একজন মানুষ, শুধু মানুষ বললে ভুল হবে একজন রাণীও বটে, যার কিনা কোন নাম নেই! আবার সেই একই ব্যাক্তি
বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ ও ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে পিরিচিত। ব্যাপারটা ঘোলাটে
মনে হচ্ছে! সেবার রাণীর কথা শুনেছেন নিশ্চয়? ইহুদী, ইসলাম আর খ্রিস্টানদের
প্রধান ধর্মগ্রন্থ যথাক্রমে, তানাখ, কোরআন আর বাইবেলে রয়েছে তার উপস্থিতি। আরবদের কাছে
বিলকিস, ইথিওপিয়ানদের কাছে মাকেদা আর অধিকাংশ মানুষের কাছে
সেবার রানী নামেই অধিক পরিচিত এই ক্ষমতাশালী রাণী।
ছবিঃ উইকিমিডিয়া |
কে ছিলেন এই সেবার রাণী?
মধ্যযুগীয় কিছু খ্রিস্টান চিত্রকর্মে উপস্থাপন
করা হয়েছে একজন দিব্যজ্ঞানের অধিকারিণী আর ভবিষ্যতদ্রষ্টা হিসেবে। সেবার রানী অত্যাধিক জ্ঞান, সম্পদ এবং ক্ষমতার অধিকারিণী
ছিলেন বলে প্রচলিত ছিল। দক্ষিন আরবের রাজ্য সেবা (বর্তমান ইয়েমেন)। রানীর নামের মত বিতর্ক রয়েছে
রাজ্য সেবাকে নিয়েও। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন সেবা আসলে পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া। হাজার হাজার বছর ধরে সেবার রানীকে ঘিরে নানা গল্প
প্রচলিত আছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে। কিন্তু ধর্মগ্রন্থের বাইরে সেবার রানীর
অস্তিত্বের ব্যাপারে সন্দিহান অনেকে। এর পেছনেও যুক্তি আছে কারণ
বুক অভ কিংস-এ সেবা নামক কোন রাজ্য এবং এই রাণীর
কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি।
ছবিঃ উইকিমিডিয়া |
রাজা সলোমনের সাথে যোগসূত্র
সলোমনে ছিলেন জেরুজালেমের রাজা । অত্যন্ত
জ্ঞানী, ঈশ্বরের প্রতি আস্থা এবং জেরুজালেমের প্রাচুর্যের গল্প শুনে রাণী স্থির করলেন তিনি রাজা সলোমনের জ্ঞানের
পরীক্ষা নিতে সেই রাজ্যে যাবেন। যেই কথা সেই কাজ।
বেরিয়ে পরলেন জেরুজালেমের উদ্দেশ্যে। রাণী সলোমনের জ্ঞান এবং বুদ্ধিমত্তায় মুগ্ধ হলেন এবং
সলোমনের ধর্ম গ্রহন করলেন। জেরুজালেমে
অবস্থানকালে সোলায়মান রানীকে অত্যন্ত উদারতার এবং আতিথিয়েতা দেখিয়েছিলান।
রাজা সলোমন সেবার রানিকে তাঁর যা কিছু ইচ্ছা করেছিলেন তা দিয়েছিলেন। একটা পর্যায়ে
সেবার রানী বিলকিস আর রাজা সলোমন একে অপরের প্রেমে পড়েন এবং রানী যখন সেবায় ফিরে
যান তখন তিনি গর্ভবতী ছিলেন । রানী সেবায় ফিরে গিয়ে এক ছেলের জন্মদান করেন। পরে
তার নাম রাখা হয় মেনেলিক।
যার গল্প বলে মা তার সন্তান কে ঘুম
পাড়ান, যার কেসসা নানী তার নাতনীদের শোনান তার অস্তিত্ব আসলে কতটুকু এ নিয়ে বিতর্কের
শেষ নেই৷ যাকে নিয়ে বানানো হয়েছে শত শত গল্প যা প্রচলিত আছে যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে।
সেই সেবার রানীর অস্তিত্বের খুব বেশি
প্রমাণ প্রমাণ পাননি ইতিহাসবিদেরা। তারপরও শিল্প সাহিত্যে তার উপস্থিতি বর্তমান
এবং ভবিষ্যতেও তা চলবে। মিথ্যা ভুল গুজব বলে বলে সত্যের সন্ধান করবে গবেষকরা আরো
অনেক সহস্রাব্দব্যাপী।
0 Comments
Post a Comment