"মানুষ মানুষের জন্যে,  জীবন জীবনের জন্যে" পরিচিত এই লাইনটির তাৎপর্য  অনেক।  মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানো, মানুষের কষ্টে সমব্যথী হওয়া মানুষেরই ধর্ম।  আমাদের সমাজে একটি বিষয়ে কখনো সাম্প্রদায়িক বিধিনিষেধ মানা হয় না আর সেটি হল যখন কাউকে রক্ত দেওয়া হয়।  একজন মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দেওয়ার সময় বিবেচনা করা হয় না কে হিন্দু বা মুসলিম,  বৌদ্ধ অথবা খ্রিষ্টান, শুধু মএলানো হয় রক্তের গ্রুপ আর দেখা হয় রক্তদাতা শারীরীক ভাবে সুস্থ কিনা।

শরীরে ট্যাটু থাকলেও দেওয়া যাবে রক্ত!

একটা সময় ছিল যখন রক্তের অভাবে মানুষের মৃত্যু হত।  সমাজে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ থাকলেও কেউ রক্ত দিতে চাইতো না।  কিন্তু এখন রক্তের প্রয়োজন হলে অনেকেই এগিয়ে আসতে দেখা যায়। বিশেষ করে যুবসমাজকে।  কিন্তু রক্ত দেওয়া নিয়ে যুবসমাজের  মধ্যে এখন একটি বড় ধরনের বিড়ম্বনা লক্ষ্য করা যায়। আর সেটি হল ট্যাটু।

ট্যাটু কিভাবে রক্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায় হতে পারে? 

মনে করা হয়  ট্যাটু করানোর সময় জীবানুযুক্ত এবং বারবার ব্যবহার করা সুঁইয়ের মাধ্যমে জীবাণু একজনের শরীর থেকে অন্যজনের  শরীরে প্রবেশ করতে পারে এবং রক্তদানের মাধ্যমে তা যেকোনো সুস্থ মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে । এইডস,  হেপাটাইটিস বি, সি, এর মত তাই রক্তদানের পূর্বে ট্যাটুর ব্যাপারটাও বিবেচনায় আসে।

Lশরীরে ট্যাটু থাকলেও দেওয়া যাবে রক্ত!

যাদের শরীরে ট্যাটু আছে তারা কি রক্ত দিতে পারবে না?  

রক্তদাতা দের  মধ্যে একটা বিশাল অংশ যুবক শ্রেণি  আবার ট্যাটু করার ক্ষেত্রে  প্রবণতা সবচেয়ে যুবসমাজেরই বেশি।  তাহলে!   যাদের শরীরে ট্যাটু আছে তারাও রক্ত দিতে পারবে তবে একটা নির্দিষ্ট সময় পর।   বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ন্যাশনাল ব্লাড  কাউন্সিলের নির্দেশ অনুসারে  ট্যাটু করানোর এক বছর পর থেকেই স্বাভাবিক নিয়মে রক্ত দেওয়া যায়।
একটা সাধারণ গুজব যেটা মানুষ বিশ্বাস করে থাকে তা হলো "ট্যাটু করানোর পর আর রক্তদান করা যায় না" । যা শুধুমাত্রই একটা মিথ । সতর্কতা এবং সচেতনতার অভাবে অনেকেই ট্যাটু করানোর পর আর রক্তদান করতে পারেন না । কিন্তু সেটা নির্দিষ্ট সময়ের অপেক্ষা মাত্র।  ট্যাটু করানোর পর ছয় মাস থেকে একবছর পর থেকে রক্তদাতা স্বাভাবিক নিয়মে কক্ত দিতে পারেন।
কিন্তু ট্যাটু করার পরপরই রক্ত দান অনেক সময় নিরাপদ নয়। ট্যাটুর সুচ অনেক সময় নানা ধরণের ক্ষতিকারক রোগ জীবাণু বহন করতে পারে। যেমন - হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি,HIV ইত্যাদি। অনেক সময় ট্যাটুর কালি, ধাতব বস্তু, কিংবা অন্য যেকোনো বহিরাগত বস্তু শরীরে প্রবেশ করলে এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমিয়ে ফেলে এবং এগুলো শরীরে ক্ষতিকারক ভাইরাসও সংক্রমণ করতে সক্ষম। তাই ট্যাটু করার ফলে রক্তপ্রবাহে নানা ধরণের ক্ষতিকারক বস্তু অবস্থান করতে পারে। বিশেষ ভাবে এমন কোনো জায়গা থেকে ট্যাটু করা যাবে না যেখানে ট্যাটু করার পদ্ধতি এবং কি কালি ব্যাবহৃত হবে তা নিয়মত্রান্ত্রিক ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় না।
একের কক্তে অন্যের জীবন বাচে তাই রক্তদানের ক্ষেত্রে সচেতনতা ও সর্তকতা অবলম্বন করে রক্তদান ও গ্রহন করা উচি।